প্রতিদিনই খবরের কাগজে, টিভিসহ আরো অন্যান্য মাধ্যমে খবর শুনে থাকি নতুন নতুন গ্রহ,নক্ষত্র, গ্যালাক্সি প্রভৃতি আবিষ্কৃত হচ্ছে। কোটি কোটি কিলোমিটার কিংবা শত শত আলোকবর্ষ দূরে এসব মহাকাশীয় বস্তুর অবস্থান। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এরা যে এত দূরে অবস্থান করে তা কিভাবে নির্ণয় করেন বিজ্ঞানীরা?তারা কিভাবে নিশ্চিত হন যে বাস্তবেই নক্ষত্রগুলো ঠিক তত দূরে? এ ব্যাপারে আমরা কেউ কেউ অনেক আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছি, আবার যারা এখন পড়ছি তাদেরও মনে প্রশ্ন জাগছে, সত্যিই তো! বিজ্ঞানীরা এই কাজটি করেন কি করে?
আমরা দেখে থাকি, নক্ষত্রের দুরত্ব বোঝাতে আলোকবর্ষ এককটি বেশি ব্যবহৃত হয়। কিলোমিটার, মাইলে এত বেশি দূরত্ব প্রকাশ করা প্রায়ই অসম্ভব বলা চলে। কারণ, ১ আলোকবর্ষ দূরত্ব সমান ৯ মিলিয়ন কিলোমিটার। আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টারির দূরত্ব ৪.২ আলোকবর্ষ।কোনো কোনো নক্ষত্র কয়েক শত থেকে হাজার হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে। এখন যে বিষয়টি আলোচনা করবো তা মূলত নিকটবর্তী নক্ষত্রের দুরত্ব নির্ণয়ের পদ্ধতি। নিকটবর্তী বলা হলেও তা কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই আমাদের নাগালের বাইরে।
তুলনামূলক ভাবে নিকটবর্তী(প্রায় ১০০ আলোকবর্ষেরও নিকটে) নক্ষত্রের দুরত্ব নির্ণয়ের জন্য প্যারালাক্স(Parallax) পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। বিষয়টি শুনতে খানিক অদ্ভুত হলেও এটা একটি অত্যন্ত সহজ ট্রিক। ম্যাজিকের মতো এটা আমরা হাতেকলমে শিখে ফেলতে পারি। প্রথমে মুখের সামনে হাতের একটি আঙুল প্রসারিত করি। এরপর বাম চোখ বন্ধ রেখে শুধু ডান চোখ দিয়ে আঙুলের দিকে তাকাই। আবার ডান চোখ বন্ধ রেখে বাম চোখ দিয়ে আঙুলের দিকে তাকাই। একবার ডান চোখ আরেকবার বাম চোখ এভাবে করতে থাকলে মনে হবে যেন আঙুল এদিক ওদিক হচ্ছে। আসলে আঙুল পূর্বের অবস্থানেই আছে কিন্তু আমাদের দৃষ্টির পরিবর্তনে এটা অবস্থান পরিবর্তন করছে বলে মনে হচ্ছে।
একই পদ্ধতি ব্যবহার করে নক্ষত্রের দুরত্বও বের করে ফেলা সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে আঙুলের পরিবর্তে নক্ষত্রকে লক্ষ্য করে ডান চোখ ও বাম চোখ দিয়ে তাকালে দেখা যাবে, কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। কারণ নক্ষত্র গুলো এতই দূরে অবস্থান করে যে, দুই চোখের কাছাকাছি অবস্থান তেমন কোনো কৌণিক বিচ্যুতি সৃষ্টি করতে পারে না। দুই চোখ যদি পরস্পর থেকে কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করতো, তাহলে এদের দ্বারা প্যারালাক্স পদ্ধতিতে নক্ষত্রদের দূরত্ব পরিমাপ করা যেত। চোখকে যেহেতু মিলিয়ন মিলিয়ন কিলোমিটার দূরে অবস্থান করানো সম্ভব না, কিন্তু বিজ্ঞানীরা এই সমস্যার সমাধান হিসেবে বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছেন। বিজ্ঞানীরা মহাকাশীয় বস্তুর দূরত্ব মাপতে পৃথিবীর কক্ষপথীয় ঘূর্ণনকে ব্যবহার করেন। সূর্যের চারপাশে পৃথিবীর কক্ষপথের ব্যাস ১৮৬ মিলিয়ন মাইল। এটি মোটামুটি যথেষ্ট লম্বা দুরত্ব। এত পরিমাণ দূরত্বে দূরবর্তী নক্ষত্রের প্যারালাক্স অনায়াসেই শনাক্ত করা যাবে।
কক্ষপথের কোনো অবস্থান থেকে নক্ষত্রের অবস্থানের মাপ নিয়, ছয় মাস পর আবারো ঐ নক্ষত্রের মাপ নিলে প্যারালাক্স পদ্ধতির মাধ্যমে তার দূরত্ব নির্ণয় করা যাবে। এখানে যেহেতু ছয় মাস আগে ও ছয় মাস পরে পৃথিবীর দুই অবস্থানের দূরত্ব জানা আছে, তাই ত্রিকোণমিতিক সূত্রের মাধ্যমে সহজেই নক্ষত্রের দুরত্ব বের করা যাবে।এই পদ্ধতি যা সূর্যের চারিদিকে পৃথিবীর কক্ষপথের জ্যামিতি ব্যতীত অন্য কোনো অনুমানের উপর নির্ভর করে না।
নামঃ সামিয়া রহমান
ডিপার্টমেন্টঃ এপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকস
ক্লাব পজিশনঃ অর্গানাইজার
রাবি সায়েন্স ক্লাবের উদ্দ্যোগে সাইবার সিকিইরিটি ওয়েবিনার এর আয়োজন
রাবি সায়েন্স ক্লাবের উদ্দ্যোগে বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবিনার এর আয়োজন
শুরু হয়েছে আরইউএসসি জাতীয় জীববিজ্ঞান উৎসব ২০২১
সফলভাবে সম্পন্ন হলো দুইদিন ব্যাপী ” আরইউএসসি জাতীয় জীববিজ্ঞান উৎসব-২০২১”
0 Comments